চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রত্যাখ্যান করে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর জননেতা মন্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়ার নেতৃত্বে আজ ৯ই জুন ২০২২ বৃহস্পতিবার বিকালে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী যথাক্রমে এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন ও দেলওয়ার হোসাইন, ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী যথাক্রমে কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শেখ আল আমিন, আব্দুস সালাম, শেখ শরিফ উদ্দিন আহমেদ, মোবারক হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী পুর্বের সভাপতি মু. আবুল খায়ের, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম মুরাদ, সেক্রেটারী তৌহিদুল ইসলাম সহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের বিভিন্ন থানা আমীর, সেক্রেটারি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী প্রতিবাদ সমাবেশে মন্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ শিরোনামে আওয়ামী সরকার এবারের বাজেট প্রস্তুত করলেও এই বাজেটে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কোন প্রতিফলন ঘটেনি। বাজেটে দেশের প্রান্তিক, নিম্নমধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠী উপেক্ষিত হয়েছে। এই বাজেট অতি উচ্চাভিলাষী ও ঘাটতির বাজেট। এ বছর বাজেটে মূল্যস্ফিতি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কৃষি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, মানবসম্পদ ও শিক্ষা খাতে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বলা হলেও আসলে বাস্তবতার সাথে তার কোনো মিল নেই। এই বাজেটের ফলে জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আরও বেড়ে যাবে। এরফলে জনগণের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। ব্যাপক লুটপাট এবং নির্বাচনি বৈতরণি পার হওয়ার জন্য শুভঙ্করের ফাঁকির এই বাজেট জনগণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি কৃষি অথচ প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষিখাতকে যথাযথ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়নি। রাসায়ণিক সার সহ উৎপাদনের উপকরণের মূল্য হ্রাসের কোনো কথা বলা হয়নি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শ্রমিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বাজেটে কোনো বরাদ্দের কথা বলা হয়নি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে তাও পর্যাপ্ত নয়। রেমিট্যান্স যোদ্ধা আমাদের প্রবাসী ভাইদের পুনর্বাসনের জন্য বাজেটে কোনো দিক নির্দেশনা নেই। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা অত্যন্ত ভঙ্গুর। হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী নেই। চিকিৎসার অভাবে মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এ পরিস্থিতিতেও স্বাস্থ্যখাতে খাতের জন্য যথেষ্ঠ বরাদ্দ দেয়া হয়নি।
প্রস্তাবিত বাজেটকে ঋণনির্ভর আখ্যা দিয়ে মন্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, মোট বাজেটের ৩৬ দশমিক ১৪ শতাংশই ঋণ নির্ভর। গত বছরের ন্যায় ঋণ পরিশোধ করতেই সরকারের নাভিশ্বাস উঠে যাবে। প্রস্তাবিত বাজেট এবং প্রবৃদ্ধির হার বাস্তবতা বিবর্জিত ও কল্পনা নির্ভর। সরকারের প্রস্তাবিত এ বাজেটে দেশের আর্থিক শৃঙ্খলা আরো ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাজেটে অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করা অর্থের বৈধতা দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। মূলত দলীয় এবং দলীয় পছন্দের লোকদের দীর্ঘ দেড় দশক ধরে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ টাকার পাহাড়কে বৈধতা দেয়ার জন্য বাজেটে এ প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এটা দুর্নীতিবাজদের সাথে আপোষ ছাড়া কিছু নয়। যা দুর্নীতিকে আরো উৎসাহিত করবে। এ টাকার মালিক সরকার নয়, এ টাকার মালিক জনগণ। তিনি প্রকৃত মালিক জনগণের নিকট এ টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আহবান জানান।